প্রতিদিন সকালে বাইকটাকে ধোয়ামোছা করা অভ্যাস হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাইকের সিটটা একটু বেশি সময় নিয়ে পরিষ্কার করি। তুমি একদমই ধুলো পছন্দ করতে না, বাইকে করে যতবার তোমায় নিয়ে বাইরে গেছি ততবার সিটের ধুলো নিয়ে অভিযোগ ছিল।
আচ্ছা এখনও কি ধুলো তোমার অপছন্দের?
মোবাইলটা বেজে উঠলো, স্ক্রিনে ভেসে উঠলো সেই চেনা নাম্বারটা। কল রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে বললো:
-আমি তামিম বলছিলাম। মেহেদী সাহবে আপনি কি এখন মেডিকেলে আসতে পারবেন? খুবই জরুরী কিছু কথা ছিল।
আমি ঘাবড়ে গেলাম। কিছু বুঝে উঠার আগেই ফোনটা কেটে গেল। মাথায় অনেক চিন্তা ভাবনা আসতে লাগলো। রুহির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আজ প্রায় পাচ বছর। হঠাত কেন কল দিতে পারে? তাহলে কি এই ব্যাক্তি রুহির হাসবেন্ড? এতদিনে নিশ্চয়ই বিয়ে করে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে সুখে শান্তিতেই আছে।আবার চিন্তা করলাম রুহির কিছু হয় নি তো? এটা মাথায় আসতেই মেডিকেলের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। মেডিকেলে গিয়েই আকিব সাহেবের সাথে দেখা।আমি দেখেই অবাক। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সেশনেই ছিল। তবে ও ছিল জেনেটিক্সে। আর আমি আর রুহি ছিলাম কেমিস্ট্রিতে।রুহিকে প্রচন্ড ভালোবাসতো। আর ওর জন্যই আমাদের এত বছরের বিচ্ছেদ।তবে নিশ্চয়ই রুহি তামিমকেই বিয়ে করে নিয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম:
-কি ব্যাপার হঠাত জরুরী তলব? রুহির কিছু হয় নি তো?আপনারা নিশ্চয়ই বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ভালই আছেন?
-আপনি ভুল ভাবছেন। রুহি আমাকে বিয়ে করে নি। রুহি আপনাকেই ভালবাসতো।
-মানে কি? ও তো আপনার জন্যই আমার সাথে ব্রেক আপ করেছিল।
-আমি আর রুহি খুবই ভাল বন্ধু ছিলাম। বেস্ট ফ্রেন্ড বলতে পারেন।তবে রুহি কখনো আমাকে ভালবাসে নি। সব সময় আপনাকেই ভালবাসতো।
-তাহলে ও এতদিন যোগাযোগ করে নি কেন?
-আপনার সাথে ব্রেকআপের পর রুহির ভয়াবহ এক্সিডেন্ট হয়। আর তাতেই রুহি কোমায় চলে যায়। তাই আর আপনার সাথে যোগাযোগ হয় নি। আমিও বিদেশ চলে যাই তাই কিছু জানাতে পারি নি। আজ রুহির জন্মদিন তাই ভাবলাম সব কিছু জানানোর আর ভাল কোন দিন হয় না।
-ও এখন কোথায়?
-চলুন আপনাকে ওর কাছে নিয়ে যাই।
-কেবিনের দরজা দিয়ে ঢুকেই দেখলাম রুহি নির্বাক তাকিয়ে আছে। আমি কাছে গিয়ে বসতেই চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি বের হতে লাগলো।আমাকে দেখেও আজ সে নিশ্চুপ।
0 মন্তব্যসমূহ
If you have any suggestions please let me know. It will be my pleasure to know your opinions. 😊