কল্পনারীর সাক্ষাত (পর্ব-১)

             
পর্ব-১

কল্পনারী আজ আবার রিয়ানের স্বপ্নে এসেছিল। ছেলেটার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই মনমরা হয়ে বসে আছে। এটা যেন তার দৈনন্দিন জীবনের অংশ। প্রতিদিনই একই ঘটনা দেখে আসছি। তারপরো আমি প্রতিদিন নতুন ভাবে একই প্রশ্ন  করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত মুখ থেকে সেই কল্পনারীর রহস্য উদঘাটন করতে পারলাম না। আমি কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নই। একদিন না একদিন ঠিক পরিচয় বের করে ছাড়বোই।
ভার্সিটির সময় হয়ে যাচ্ছে। আমি রিয়ানকে বললাম-

-কিরে যাবি না আজ?
- তুই যা। মন ভাল নেই।
-আরে চল। আর কতকাল আর ক্লাস মিস দিবি এভাবে? ভার্সিটির তিন বছর প্রায় তো চলেই গেল। ওঠ ক্লাস করবি চল।
-তোর জ্বালায় আর মিস দিতে পারলাম কই? আচ্ছা  তুই আগে গোসল করে রেডি হয়ে নে।
-আরে আমি তো রেডি।তুই ফ্রেশ হয়ে নে তাড়াতাড়ি।  ট্রেন পাবি না পরে।




অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে সেদিনের মত ভার্সিটি  নিয়ে গেলাম  রিয়ানকে।
আচ্ছা রিয়ানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। রিয়ানের সাথে আমার পরিচয় সেই কলেজ থেকে। একই কলেজে পড়তাম দুজনেই। কিন্তু মজার ব্যাপার হল ফার্স্ট ইয়ারে থাকতে দুজনেই দুজনের সাথে কথা বলতাম না। রিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাসতো শুধু। আমিও হাসতাম ওর দিকে তাকিয়ে। রিয়ান সব সময় কলেজের টেলেন্ট ছেলেদের সাথে থাকতো। আতেল বললেও ভুল হবে না। তাই আর আমি নিজ থেকে কথা বলার সাহস করতাম না। কিন্তু কেন জানি ছেলেটাকে দেখলে আপন আপন লাগতো। তাই আর কথা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না। সেকেন্ড ইয়ারে গিয়ে প্র‍্যাক্টিকেল খাতা চাওয়ার উছিলায় প্রথম কথা বলা। সেই থেকে বন্ধুত্বের শুরু। তবে ঘনিষ্ঠতার শুরু হয় মেডিকেল কোচিং করার সময় থেকে। তখন ভাবতেই পারি এই ছেলেটাই একদিন আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যাবে। এখন দুজনেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি। তবে কেন জানি দুজনেই কেন জানি ভার্সিটিকে এখনো আপন করে নিতে পারি নি। হয়ত ভার্সিটি আমাদের লক্ষ ছিল না তাই।
যেহেতু দুজনেই চট্টগ্রামে ফ্যামিলি ছাড়া তাই মেস করে থাকি একসাথে। রিয়ানের ফ্যামিলি অবশ্য আগে চট্টগ্রামেই ছিল। আংকেল রিটায়ার করার পর থেকে ফ্যামিলি এখন গ্রামেই থাকে। পরিবারের বড় ছেলে রিয়ান। তাই তার উপর অনেক দায়িত্ব। ছোট ভাইটা মাত্র এস.এস.সি দিল। সংসারে অনেক অভাব অনটন।  তাই ছেলেটা সারাদিন টিউশন করে মাস শেষে যা পারে বাড়িতে পাঠায়। রিয়ান জানে রিয়ানই এখন তার পরিবারের একমাত্র ভরসা।

চলবে......

আপনি যদি এই ব্লগে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আমার বাকি লিখা গুলো পড়ে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কেমন লাগলো। আপনার মন্তব্য আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। ধন্যবাদ। 😊


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ